গৃহপালিত পশু ও হাঁস মুরগি চিকিৎসা পদ্ধতি
গৃহপালিত পশু ও হাঁস মুরগি চিকিৎসা পদ্ধতি

গাে-(গরু) চিকিৎসা প্রণালী
ঔষধ খাওয়াইবার সময় গরুকে সাবধানতার সহিত ধরিয়া বােতলে করিয়া, ঔষধ পান করানাে সুবিধাজনক। অসাবধানে গরু হঠাৎ মারা যাইতে পারে। কোনও কোনও ঔষধ কলাপাতায় মুড়িয়া।
গরুর মুখ হা করাইয়া খাওয়াইতে হয়। ঔষধ তরল হইলে গুরুর দুই পাশে দুইজন দাড়াইয়া গুরুর মুখ হা করাইবেন, অপর ব্যক্তি গরুর। মুখে অল্প করিয়া তাহা ঢালিয়া দিবেন। ইহাই সহজ উপায়।
চিকিৎসাদি ও ঔষুধের মাত্রা
গরুর চিকিৎসার সময় সর্বপ্রথম রােগ নির্ণয় করা কর্তব্য। রােগ না জানিয়া ঔষধ দিলে উপকার হওয়া তাে দূরের কথা অপকার ঘটিয়া থাকে। কোন কোন উপসর্গে গরুর বেশি কষ্ট হইতেছে প্রথমে তাহা নির্ণয় করিবেন। যে উপসর্গ অনেক দিন ধরিয়া দেখা যায়, তাহাতে গরু মরিয়া যাইতে পারে। নিজে রােগ ধরিতে না পারিলে অভিজ্ঞ লােকের পরামর্শ নিয়া। সেইমতে ঔষধ ব্যবহার করিবেন। ঔষধের সবগুলি পাওয়া না গেলে যেগুলি পাওয়া যায় তাহা দিয়াই। ঔষধ প্রস্তুত করিবেন। উপকরণগুলির অন্ততঃ অর্ধেক হইলেই চলে। ইহাতেও রােগের অনেকটা উপুশএমের আশা করা যায়। গরুর বয়স ও স্বাস্থ্যের প্রতি বিবেচনা করিয়া ঔষধ প্রয়ােগ করিতে হয়। নিমে বর্ণিত ঔষধগুলি কেবল পূর্ণবয়স্ক গরুর জন্য ব্যবহার্য।
গরুর বসন্ত রােগ
রােগ লক্ষণঃ এই রােগ হইলে প্রথম অবস্থায় গরুর খুসখুসে কাশি হয়, গা শিহরিয়া উঠে, মুখ গরম হয়। পেট আঁটিয়া যায়, গা কাপে ও গরু অলসতা বােধ করে, কান ঝুলিয়া পড়ে, নাক কফে ভিজিয়া উঠে, কখনও খুব পিপাসা হয়, পা-গুলি জড় হইয়া যায় এবং পিঠ কুঁজো হইয়া উঠে, দাঁত কড়কড় করে ও ঘন ঘন হাই তােলে। তখন আস্তে আস্তে ও অনিয়মিতভাবে জাবর কাটে। রােগ বৃদ্ধি পাইতে থাকিলে গরুর জাবর কাটা বন্ধ হয়।
ঘন ঘন শ্বাস টানে, চোখে সামান্য পিচুটি পড়ে, প্রবল জ্বর। হয়, মাংসপেশীর খিচুনী বাড়ে, বক্ষদেশে মাথা গুজিয়া রাখে। এই অবস্থায় গরুর পিপাসা বৃদ্ধি পায়, মাড়ি এবং চোয়ালের ঝিল্লি অতিশয় লাল হইয়া উঠে, খুব বেগ ও কষ্টে লাফায়, মল ও মুত্রাশয় বুলিয়া পড়ে, পেট আটিয়া যায়, বিষ্ঠায় রক্ত ও শ্লেষ্ম মিশানাে থাকে।
তারপর শেষু অবস্থা। এই অবস্থায় গরুর নাকের ভিতরের ও চক্ষুর পাতার ভিতরের চামড়া উঠিয়া যায়, সম্মুখের পাটির দাত পড়িয়া যায়, চোখ মুখ ও নাকের ভিতর হইতে অনবরত আঠার মতাে রস বাহির হইতে থাকে, ঢােক গিলিবার সময় কাসি। হয়। চামড়া, শিং, কান, পা ও মুখ ঠান্ডা হইয়া যায়, খাড়া হইয়া থাকিতে পারে না, দুর্বলতার দরুণ। সবদা শুইয়া থাকে। মাঝে মাঝে গোঁ-গোঁ শব্দ করে। শ্বাস ফেলিতে খুব কষ্ট হয় এবং কোঁকায়। অবশেষে তরল বাহ্যি করিয়া মারা যায়।
গরুর বসন্ত রোগের কিৎসা পদ্ধতি
বসন্ত রােগের প্রথম অবস্থায় যদি ভেদ বন্ধ হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে পেট গরম না। হওয়া পর্যন্ত একবার কি দুইবার করিয়া তিন হইতে ছয় কাচ্চা পরিমাণ লবণ বা এপশাম সলট প্রভৃতি। লবণময় রেচক ঔষধ সেবন করাইবেন।
কিন্তু সাবধান, তখন গরুকে কঠিন জোলাপ দিবেন না। কারণ। গরু তখন দুর্বলতার দরুণ জোলাপ সহ্য করিতে পারিবে না। রােগের প্রথম অবস্থায় সারা, চিরতা, কপূর। পৌণে একতােলা, ধুতরা সিকি কাচ্চা, দেশী মদ আধ পােয়া মিশাইয়া সেবন করাইতে হয়। রােগের মধ্য অবস্থায় ধেড়ানী ২৪ ঘণ্টার অধিক কাল স্থায়ী হইলে পৌনে এক ভােলা মাজুফল উত্তমরূপে চূর্ণ করিয়া উপরে বর্ণিত ঔষধের সহিত সেবন করাইবেন। ধেড়ানী বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা পর পর ঐ ঔষধ।
সেবন কুরাইলে ফল পাওয়া যায়। চাউল ও কলাই একত্রে উত্তমরূপে সিদ্ধ করিয়া ঘন অবস্থায় খাওয়াইবেন। অথবা চিরতা চূর্ণ সােয়া ভােলা, পলাসের গঁদ পৌণে চারি তােলা, খড়ি চূর্ণ পৌণে এক ভােলা, আফিম ছয় আনা পরিমাণ একত্রে উত্তমরূপে চূর্ণ করিয়া উহাতে এক ছটাক পরিমাণ দেশী মদ মিশাইয়া এক সের। ভাতের মাড়ের সহিত খাওয়াইবেন। শিমূল বিচিও বসন্ত রােগের আর একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। ইহা মােটেই। বিষাক্ত নহে। বসন্ত পাকিবার পূর্বে ইহা সেবন করাইলে সুফল হয় কিন্তু পাকিয়া গেলে পর সেবন করাইলে কোন ফল হয় না।
এই ঔষধ তিন দিন ইক্ষু গুড়ের সহিত সেবন করাইলে সুফল পাওয়া যায়। মধ্যবয়স্ক গাভী বা বলদুকে প্রথম দিন প্রথম বারে ৭টি ও দ্বিতীয়বারে ৫টি, দ্বিতীয় দিন প্রথমবার ৭টি ও দ্বিতীয়বারে। ৫টি এবং তৃতীয় দিন ৫টি মাত্র বীচি সেবন করাইবেন। অল্পবয়স্ক বাছুরকে প্রথম বারে ৭টি, দ্বিতীয় বারে। ৩টি, তৃতীয় বারে ৩টি, দ্বিতীয় দিন প্রথমবার ৩টি ও দ্বিতীয় বার ৩টি এবং তৃতীয় দিন ১টি মাত্র বীচি। সেবন করাইবেন। উপরে লিখিত ঔষধ বাটিয়া কলা পাতায় মােড়াইয়া খাওয়াইবেন।
চিকিৎসার জন্য পথ্য
কাঁচা ঘাস এবং জল গরম করিয়া ঠান্ডা হইলে পান করানাে উচিত। শুষ্ক ঘাস খাওয়ানাে ও স্নান করানাে নিষেধ।
গলা ফোলা রোগ
গরুর এই রােগও প্লেগের মত মারাত্মক। এই রােগ হইলে গরুর খুব জর হয়।
তখন সে কিছুই খাইতে চায় না বা জাবর কাটে না। একদিন পর গলা ফোলা দেখা দেয়। তখন গরু নিশ্বাস প্রশ্বাস ফেলিতে খুব কষ্ট পায়। রােগাক্রান্ত গরু মুখ বন্ধ করিতে পারে না, হা করিয়া থাকে এবং জিহ্বা বাহির হইয়া পড়ে ও ফুলিয়া উঠে। দুই তিন দিনের মধ্যেই গরুর মৃত্যু ঘটে। এই রােগে আক্রান্ত। গরুকে সুস্থ গরু হইতে পৃথক রাখিবেন।
তখন সে কিছুই খাইতে চায় না বা জাবর কাটে না। একদিন পর গলা ফোলা দেখা দেয়। তখন গরু নিশ্বাস প্রশ্বাস ফেলিতে খুব কষ্ট পায়। রােগাক্রান্ত গরু মুখ বন্ধ করিতে পারে না, হা করিয়া থাকে এবং জিহ্বা বাহির হইয়া পড়ে ও ফুলিয়া উঠে। দুই তিন দিনের মধ্যেই গরুর মৃত্যু ঘটে। এই রােগে আক্রান্ত। গরুকে সুস্থ গরু হইতে পৃথক রাখিবেন।
গরুর গলা ফোলা রােগ লক্ষণ
এই রােগ দেখা দিলে গরুর মুখ দিয়া অনবরত লালা পড়িতে থাকে, কখনও কখনও কাসি হয় এবং চোখ দিয়া জল পড়ে। সময় সময় জিহ্বায় ঘা-ও দেখা দেয়। গলায় গড়গড় শব্দ হয়। কিছুই খাইতে পারে না। ভেদ ও প্রস্রাব বন্ধ হইয়া যায়।
গরুর গলা ফোলা রোগের চিকিৎসা
যদি গরুর নাক ও মুখ দিয়া শ্লেষ্ম ঝরে ও মাথা নিচু করিয়া থাকে এবং গলা গড় গড় করে তবে নিম্নলিখিত নিয়মে তাপ দিবেন। একটি নূতন বাড়িতে কার্পাসের বীজ, সরিষার শুকনা গাছ, সাচি কুমড়ার শুকনা লতা ও তাল গাছের শুকনা মােচা দিয়া ঘুটের আগুন করিয়া গরুর মুখের নীচে আগুনের উপর ঘড়িটি চাপাইয়া দিবেন। অল্পক্ষণ পরে যে বােয়া বাহির হইবে উহা গরুর নাক, মুখ ও চোখে লাগিলেই নাক, মুখ ও চোখ দিয়া অনবরত জল নির্গত হইতে থাকিবে। উহাতে গরুর মাথার ভার কমিয়া যাইবে। নিম্নে বর্ণিত ঔষধ সেবন করাইলে ফল পাওয়া যাইবেগুটি চূর্ণ ১ তােলা, গন্ধক চুর্ণ ২ তােলা, আধা সের ভাতের মাড় বা মসীসার (তিসী) মাড়ের সহিত মিশাইয়া সেবন করাইলে রােগ সারিয়া যাইবে।
প্লেগঃ মানুষের প্লেগ যেমন মারাত্মক গরুর প্লেগও তেমনি অতি মারাত্মক। এই রােগে আক্রান্ত হলে গরু ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। কাজেই যথাসম্ভব শীঘ্র উহার চিকিৎসা করা উচিত।
রােগ লক্ষণ-এই রােগ হইলে গরুর মুখ দিয়া অনবরত লালা ঝরিতে থাকে। কখনও কখনও চোখ দিয়া জল পড়ে, কান ও নাকের ছিদ্র লাল হয়। নাক দিয়া লালা ঝরতে থাকে, জিহ্বায় ঘা ও দুর্গন্ধ হয়। গলায় গড় গড় শব্দ হয়। তখন গরু কিছুই খাইতে পারে না। ভেদ ও প্রস্রাব বন্ধ হইয়া যায়।
প্লেগঃ মানুষের প্লেগ যেমন মারাত্মক গরুর প্লেগও তেমনি অতি মারাত্মক। এই রােগে আক্রান্ত হলে গরু ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়। কাজেই যথাসম্ভব শীঘ্র উহার চিকিৎসা করা উচিত।
রােগ লক্ষণ-এই রােগ হইলে গরুর মুখ দিয়া অনবরত লালা ঝরিতে থাকে। কখনও কখনও চোখ দিয়া জল পড়ে, কান ও নাকের ছিদ্র লাল হয়। নাক দিয়া লালা ঝরতে থাকে, জিহ্বায় ঘা ও দুর্গন্ধ হয়। গলায় গড় গড় শব্দ হয়। তখন গরু কিছুই খাইতে পারে না। ভেদ ও প্রস্রাব বন্ধ হইয়া যায়।
প্লেগ রোগের চিকিৎসা
রােগের প্রথম অবস্থায় গরুকে বমি বা দাস্ত করাইবার ব্যবস্থা করিবেন। তারপর নিম্নলিখিত ঔষধ ব্যবহার করাইবেন।
সেবনের জন্য—কস্তুরী-আধ ভােলা, এর বীজ চূর্ণ-আধ তােলা, কপূর এক ভােলা, গাঁজা ১ ভােলা, আপাং মূল চূর্ণ ১ ভােলা, অতসী বীজ চূর্ণ ১ তোলা, পিপুল চুর্ণ- ১ ভােলা, রাঙ্গা চুর্ণ ১ তােলা, দুই সেরা পরিমাণ ভাতের মাডের সহিত মিশাইয়া প্রত্যহ চারবার সেবন করবেন।
প্রলেপের জন্য—ধুতুরার পাতা ১ ভাগ, সমদ্র ফেনা ১ ভাগ, বাবুই তুলসীর পাতা ১ ভাগ, দশমূল পাচন ১ ভাগ একত্রে বাটিয়া গরম করিবেন। অল্প গরম থাকিতে কাপড়ের পুটলি বাঁধিয়া ফোলা জায়গায় বাঁধিয়া দিবেন। চার ঘন্টা পর পর প্রলেপ রদলাইয়া দিবেন।
পথ্য- প্লেগ রােগে আক্রান্ত গরুকে ভাতের মাড়ের সহিত লবণ মিশাইয়া খাওয়াইবেন। কখনও শক্ত বা গুরুপাক খাদ্য খাওয়াইবেন না।
নাদবন্ধঃ গরুর না হইলে শুধু প্রস্রাব বন্ধু হয় কখনওবা প্রস্রাব বন্ধ হইয়া যায়। ইহাতে গরু খুব কষ্ট পায়, গা ছড়াইয়া ছটফট করিতে থাকে, উঠিবার শক্তি থাকে না। নিম্নে বর্ণিত ঔষধ প্রয়ােগে সুফল পাওয়া যায়। (১) সােমরাজ ৩ তােলা, বৈচীমূলের ছাল ৩ ভােলা, ইন্দ্রযব ৩ তােলা একত্রে বাটিয়া গরুকে তিনবার সেবন করাইবেন। (২) পুরাতন গুড় ১ ছটাক, কদম পাতার রস ২ ছটাক একত্র করিয়া সেবন করাইলে পেট কামড়ানি সারিয়া যায়, আমরুলের পাতা উত্তমরূপে ধুইয়া ছেচিয়া রস বাহির করিয়া গরুর চোখে দিলে পেটকামরানি সারিয়া যায়। ভেদ বন্ধ হইলে ২ সের পরিমাণ ডাবের জল গরম করিয়া খাওয়াইলেও সুফ পাওয়া যায়।
সেবনের জন্য—কস্তুরী-আধ ভােলা, এর বীজ চূর্ণ-আধ তােলা, কপূর এক ভােলা, গাঁজা ১ ভােলা, আপাং মূল চূর্ণ ১ ভােলা, অতসী বীজ চূর্ণ ১ তোলা, পিপুল চুর্ণ- ১ ভােলা, রাঙ্গা চুর্ণ ১ তােলা, দুই সেরা পরিমাণ ভাতের মাডের সহিত মিশাইয়া প্রত্যহ চারবার সেবন করবেন।
প্রলেপের জন্য—ধুতুরার পাতা ১ ভাগ, সমদ্র ফেনা ১ ভাগ, বাবুই তুলসীর পাতা ১ ভাগ, দশমূল পাচন ১ ভাগ একত্রে বাটিয়া গরম করিবেন। অল্প গরম থাকিতে কাপড়ের পুটলি বাঁধিয়া ফোলা জায়গায় বাঁধিয়া দিবেন। চার ঘন্টা পর পর প্রলেপ রদলাইয়া দিবেন।
পথ্য- প্লেগ রােগে আক্রান্ত গরুকে ভাতের মাড়ের সহিত লবণ মিশাইয়া খাওয়াইবেন। কখনও শক্ত বা গুরুপাক খাদ্য খাওয়াইবেন না।
নাদবন্ধঃ গরুর না হইলে শুধু প্রস্রাব বন্ধু হয় কখনওবা প্রস্রাব বন্ধ হইয়া যায়। ইহাতে গরু খুব কষ্ট পায়, গা ছড়াইয়া ছটফট করিতে থাকে, উঠিবার শক্তি থাকে না। নিম্নে বর্ণিত ঔষধ প্রয়ােগে সুফল পাওয়া যায়। (১) সােমরাজ ৩ তােলা, বৈচীমূলের ছাল ৩ ভােলা, ইন্দ্রযব ৩ তােলা একত্রে বাটিয়া গরুকে তিনবার সেবন করাইবেন। (২) পুরাতন গুড় ১ ছটাক, কদম পাতার রস ২ ছটাক একত্র করিয়া সেবন করাইলে পেট কামড়ানি সারিয়া যায়, আমরুলের পাতা উত্তমরূপে ধুইয়া ছেচিয়া রস বাহির করিয়া গরুর চোখে দিলে পেটকামরানি সারিয়া যায়। ভেদ বন্ধ হইলে ২ সের পরিমাণ ডাবের জল গরম করিয়া খাওয়াইলেও সুফ পাওয়া যায়।
গরুর জ্বরু ও চিকিৎসা
শরীর গরম হওয়া, সর্দি, কাসি, কোষ্ঠবদ্ধতা, ইত্যাদি গরুর জ্বর রােগের লক্ষণ। কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি হইলে নিম্নে বর্ণিত ঔষধ সেবন করাইয়া কোষ্ঠ পরিষ্কার করাইবেন (১) সেরা ১ তােলা, দেশী মদ আধ ছটাক, কুপূর বারাে আনা প্রথমে মদের সহিত কপূরটুকু মিশাইয়া পরে উহার সহিত সােরা মিশাইয়া ঠান্ডা জল দিয়া রােগাক্রান্ত গরুকে সেবন করাইলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হইয়া যাইবে। তারপর নিম্নলিখিত ঔষধ দিবেন। (২) সােরা-দেড় তােলা, লবণ-আড়াই তােলা, চিরতা চূর্ণ- আড়াই ভােলা, পুরাতন গুড়-দেড় ছটাক—এইগুলাে একত্রে মিশাইয়া জুলের সহিত সেবন করাইলে সুফল পাওয়া যায়। (৩) সােরা বারাে আনা, কপূর বারাে আনা, ধুতুরার বীজচূর্ণ আধা ছটাক একত্র করিয়া ভাতের মাড়ের সহিত সেবন করাইলে রােগ ভাল হয়। (৪) কালােজিরা ২ভােলা, আয়াপানের শিকড় ১ তােলা। একত্রে বাটিয়া সেবন করাইলে সুফল পাওয়া যায়।
জিহ্বায় ঘাঃ গরুর জিহ্বায় ঘা হইলে জিহ্বার নিচে গর্ত ও স্থানে স্থানে কাঁটা কাঁটা হইয়া যায়। এই জন্য খাইতে বা জাবর কাটিতে কষ্ট হয়। চিকিত্স—এই রােগে চিতল মাছের আঁইশ পােড়াইয়া সেই ক্ষতস্থানে দিয়া গরুর মুখ দুই ঘন্টাকাল বন্ধ করিয়া রাখিলে ৩/৪ দিনেই ঘা শুকাইয়া যাইবে।
কাউর ঘাঃ– গরুর কাঁধে জোয়ালের ঘর্ষণে অনেক সময় ঘা হইয়া থাকে। ইহাকে কাউর বা আফলা বলে। এই ঘায়ে খুব চুলকানী হয়। তখন গরু গাছে বা কোন শক্ত জিনিসে কাধ ঘসিয়া কিংবা কাকে ঠোকরাইয়াও ঘা বৃদ্ধি করে।
জিহ্বায় ঘাঃ গরুর জিহ্বায় ঘা হইলে জিহ্বার নিচে গর্ত ও স্থানে স্থানে কাঁটা কাঁটা হইয়া যায়। এই জন্য খাইতে বা জাবর কাটিতে কষ্ট হয়। চিকিত্স—এই রােগে চিতল মাছের আঁইশ পােড়াইয়া সেই ক্ষতস্থানে দিয়া গরুর মুখ দুই ঘন্টাকাল বন্ধ করিয়া রাখিলে ৩/৪ দিনেই ঘা শুকাইয়া যাইবে।
কাউর ঘাঃ– গরুর কাঁধে জোয়ালের ঘর্ষণে অনেক সময় ঘা হইয়া থাকে। ইহাকে কাউর বা আফলা বলে। এই ঘায়ে খুব চুলকানী হয়। তখন গরু গাছে বা কোন শক্ত জিনিসে কাধ ঘসিয়া কিংবা কাকে ঠোকরাইয়াও ঘা বৃদ্ধি করে।
কাউর ঘা চিকিৎসা
শংখমন্দ্র আধ ভােলা, মতিহার তামাক পাতা চুর্ণ ১ ছটাক এই দুইটি সরিষার তৈলের সহিত মিশাইয়া মলম প্রস্তুত করিয়া সপ্তাখানেক ক্ষতস্থানে প্রলেপ দিলে ঘা সারিয়া যায়। অথবা-১ ছটাক মতিহার তামাক পাতার দোতা জলে ভিজাইয়া উহার কাষ্য সিদ্ধ করিয়া মলমের মত প্রস্তুত করিয়া উহার সহিত অল্প পরিমাণ সরিষার তৈল মিশাইয়া ক্ষতস্থানে দিলে ক্ষত সারিয়া যায়।
গাভীর বাঁটে ঘাঃ
অনেক সময় গাভীর বাট ফাটিয়া ঘা হইতে দেখা যায় তখন দোহন করিবার সময় গাভী, খুব কষ্ট পায়, এমন কি লাথি মারে। এই অবস্থায় বলপূর্বক গাভী দোহাইলে বাট টাটায় ও ফুলিয়া উঠে।
গাভীর বাঁটে ঘা চিকিৎসা
গাভীর বাট ফাটিয়া গিয়াছে দেখিলে জল দিয়া ধুইয়া ঘি, মাখন বা ননী মাখাইয়া দিবেন। কয়েকদিন এইভাবে প্রয়ােগ করিলে নিশ্চয় আরােগ্য হয়। কিন্তু বাট যদি বেশী ফাটিয়া উহাতে পুজ বা ঘা; হইয়া যায়, তবে নিমপাতা জলে সিদ্ধ করিয়া সেই সিদ্ধ জলে প্রত্যহ চারিবার ধুইয়া নিম্নে বর্ণিত প্রলেপদিবেনঃ- সফেদা এক আনা, ফিটকিরি দুই আনা, মােম আধ ছটাক ও ঘি এক ছটাক। ঘি ও মােম পৃথক পথক পাত্রে পাকাইয়া একত্রে মিশাইয়া পরে উহার সহিত সফেদা ও ফিটকিরি মিশাইয়া মলম তৈয়ার। করিবেন। এই মলম মাটির বা পাথরের ভান্ডে রাখিয়া প্রত্যহ নিয়ম মত প্রলেপ দিলে ঘা সারিয়া যাইবে।
খুঁটি রোগ
ঘুটি রােগ দুই প্রকারের হয়। এই রােগ সাধারণতঃ বাছুরেরই হইয়া থাকে। প্রথম অবস্থায়। রােগ মুখে দেখা দেয়। তারপর সমস্ত দেহে ছড়াইয়া পড়ে। যে স্থানে রােগ দেখা দেয় সেই স্থানটি সাদা ও সামান্য ফুলিয়া উঠে। আর এক প্রকারের ঘুটি রােগ আছে। এই রােগ হইলে গরুর অনেক স্থানের লােম উঠিয়া যায় এই রােগ হলে গরু সমস্ত শরীরে দাদের মত চাকা চাকা হইয়া ফুলিয়া উঠে। তারপর চাকা চাকা স্থানগুলির লােম উঠিয়া গিয়া লাল হইয়া উঠে, পরে ঐ লাল দাগগুলি কাল রং ধারণ করে। মাঝে মাঝে ফাটিয়া গিয়া রক্তও বাহির হয়, এবং ঘা হইয়া যায়।
চিকিৎসা-
চিকিৎসা-
(১) যে স্থানের নােম উঠিয়া যায়, সেই স্থানে ঘুটের ছাই ঘষিয়া দিলেও ভাল হয়।
(২) যে স্থানে এই রােগ হয়, সেখানে ঘর নিকানাে নেতা ঘষিয়া দিলেও ভাল হয়। হুকার বাসি জলের সহিত হলুদ ও কেলী কদম গাছের ছাল সমপরিমাণে লইয়া একত্রে বাটিয়া রােজ ঘুটিতে মালিশ করিবেন। মনে রাখিবেন, এই ঔষধ প্রত্যহ নূতন কুরিয়া তৈয়ার করিয়া দিতে হয়, কেননা ঔষধ বাসি হইলে ইহার শুণ। থাকে না। এই ঔষধ ব্যবহার করিলে ২/৩ দিনের মধ্যেই ঘা শুকাইয়া নূতন লােম উঠিয়া থাকে। এইভাবে ৭/৮ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সারিয়া যায়।
গরু কোন অঙ্গ ফোলাঃ
(১) গরু কোন অঙ্গ ফুলিয়া উঠিলে ফোলা স্থানে লােহা পােড়াইয়া দাগ দিলেই ভাল। হয়। (
২) লাঙ্গল বা গাড়ী টানিয়া কাধ ফুলিয়া গেলে মেহেদী পাতা বাটিয়া গরম প্রলেপ দিলে অথবা শামুকের জল দিলে ফোলা সারিয়া যাইবে।।
তলপেটে ফোলাঃ রােগ লক্ষণ গরু ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলিলে বুঝিয়া লইবেন গরুর তলপেট ফুলিয়াছে। এই অবস্থায় গরু কোথ দেয়, প্রায় শ্বাস বন্ধের লক্ষণ দেখা যায়। কান ঝুলিয়া পড়ে, লেজ নাড়িতে পারে না, ফলে দুর্গন্ধ হয় এবং গরুর প্রস্রাব রক্তের মত লাল হয়।
চিকিৎসা-গােল মরিচ চূর্ণ ১০টি, গুটি চূর্ণ ২ তােলা, গন্ধক চূর্ণ ২ তােলা, সােরা চুর্ণ ২০ তােলা, পুরাতন গুড় ২ ছটাক, সৈন্ধব লবণ দেড় পােয়া, এক সের গরম ভাতের মাড়ের সহিত মিশাইয়া খাওয়াইলে দাস্ত হইবে এবং পেট ফাপা সারিয়া যাইবে।
তলপেটে ফোলাঃ রােগ লক্ষণ গরু ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলিলে বুঝিয়া লইবেন গরুর তলপেট ফুলিয়াছে। এই অবস্থায় গরু কোথ দেয়, প্রায় শ্বাস বন্ধের লক্ষণ দেখা যায়। কান ঝুলিয়া পড়ে, লেজ নাড়িতে পারে না, ফলে দুর্গন্ধ হয় এবং গরুর প্রস্রাব রক্তের মত লাল হয়।
চিকিৎসা-গােল মরিচ চূর্ণ ১০টি, গুটি চূর্ণ ২ তােলা, গন্ধক চূর্ণ ২ তােলা, সােরা চুর্ণ ২০ তােলা, পুরাতন গুড় ২ ছটাক, সৈন্ধব লবণ দেড় পােয়া, এক সের গরম ভাতের মাড়ের সহিত মিশাইয়া খাওয়াইলে দাস্ত হইবে এবং পেট ফাপা সারিয়া যাইবে।
পোস্টটি পড়ে আপনি যদি বিন্দুমাত্র উপকৃত হয়ে থাকেন, আপনার কাছে অনুরোধ আপনি আপনার মত ভুক্তভোগীর যে আছে তাকে দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করবেন। নিজে জানুন অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন। ধন্যবাদ।